for Add
খলিলুর রহমান : ১৬ মে ২০১৬, সোমবার, ২১:২০:৪৫
স্প্যানিশ লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফিটাকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আগের ছয় মৌসুমেই পুরস্কারটা ভাগাভাগি করেছেন দুজনে। তাদের উপস্থিতিতে এই পুরস্কারটা তৃতীয় কেউ জিতবেন- মৌসুম শুরুর আগে এমনটা কারো ভাবনাতেই ছিল না! কিন্তু লুইস সুয়ারেজ করে ফেললেন সেই কঠিন কাজটাই। মেসি-রোনালদোকে নিজের ছায়ায় ঢেকে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার জিতে নিয়েছেন পিচিচি ট্রফি! বার্সেলোনাকে ২৪তম লিগ শিরোপা উপহার দিতে মেসি-রোনালদোর রাজত্বে প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজ রাজত্ব।
আক্ষরিক অর্থেই ২০১৫-১৬ মৌসুমে লা লিগায় ছিল সুয়ারেজ রাজত্ব। বার্সার হয়ে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার মৌসুমে সব মিলিয়ে ৫২ ম্যাচে করেছেন ৫৯ গোল! লিগে ৩৫ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৪০ গোল। লিগে রোনালদো করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ গোল। মেসি করেছেন ২৬টি! শুধু নিজে গোল করাই নয়, সুয়ারেজ সতীর্থদের দিয়েও করিয়েছেন ২৬টি গোল। মাঠে সুয়ারেজের কার্যকারিতা প্রমাণ করছে অন্য একটা তথ্যও। মৌসুমের শুরুতে চোটের কারণে প্রায় দুই মাস মাঠের বাইরে ছিলেন মেসি। কিন্তু নেইমারের সঙ্গে জুটি বেধে সুয়ারেজ মেসির অভাবটা বার্সাকে বুঝতেই দেননি। মেসিবিহীন ওই সময়ে ১০ ম্যাচে বার্সার ১৭টি গোলই করেছেন সুয়ারেজ-নেইমার। যার ১২টিই করেছেন সুয়ারেজ। এই ১২ গোলের দুটি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে।
মেসি নেই। ম্যাচটাও চিরশত্রু রিয়ালের ঘরের মাঠ বার্নাব্যুতে। ২১ নভেম্বরের এল ক্লাসিকোটা আরক্ষিক অর্থেই ছিল বার্সার জন্য বড় এক পরীক্ষা। সুয়ারেজের জোড়া গোলে বার্সা সেই পরীক্ষায় জিতে যায় ৪-০ গোলে। যে জয় বার্সাকে এনে দেয় ছয় পয়েন্টের লিড। মৌসুমের শেষের অংশটুকু সুয়ারেজ-অপরিহার্যতার প্রমাণ দিচ্ছে আরও বেশি করে। এক সময় দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে ৯ পয়েন্টে এগিয়ে ছিল বার্সা। রিয়ালের চেয়ে এগিয়ে ছিল ১০ পয়েন্টে। কিন্তু হঠাৎই যেন পথ হারিয়ে ফেলে বার্সা। লিগে টানা তিন পরাজয়ে বার্সেলোনা শিরোপা লড়াইয়ে পড়ে যায় কঠিন পরীক্ষার মুখে। লুইস এনরিকের দলের সামনে তখন সমীকরণটা দাড়ায় এমন, লিগ হাতছাড়া করতে না চাইলে জিততে হবে পরের পাঁচ ম্যাচেই!
টানা তিন ম্যাচ হারা দলটি পরের পাঁচ ম্যাচেই জিতবে, এমনটা বিশ্বাস করা একটু কঠিনই ছিল। কিন্তু সুয়ারেজ এই সমীকরণটাও মিলিয়ে দিয়েছেন অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায়। বার্সেলোনার টানা তিন হারের ম্যাচে সুয়ারেজ গোল করতে পারেননি একটিও। সেই সুয়ারেজ শেষ পাঁচ ম্যাচে করেছেন ১৪ গোল! এর মধ্যে দেপোর্তিভো লা করুণা ও স্পোর্টিং গিজনের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে করেছেন ৪টি করে গোল। লা লিগার ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গড়েছেন টানা দুই ম্যাচে ৪ গোল করে করার কীর্তি। গ্রানাডার বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী শেষ ম্যাচে করেছেন হ্যাটট্রিক। ৩-০ গোলের জয়ে বার্সা মেতে উঠে শিরোপা জয়ের আনন্দে।
মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ, বার্সার আক্রমণভাগের ত্রিরত্নের মধ্যে সুয়ারেজই ছিলেন সবচেয়ে বেশি ধারাবাহিক। লুইস এনরিকেও স্বীকার করেছেন, বার্সার শিরোপা জয়ে সুয়ারেজই ছিলেন প্রধান হাতিয়ার, ‘সুয়ারেজ ছিল আমাদের দলের মূখ্য খেলোয়াড়। শুধু গোল করার দক্ষতায়ই নয়, কঠোর পরিশ্রম ও চারিত্রিক বৈশিষ্টের বিচারেও।’ এনরিকে নিশ্চিতভাবেই চাইবেন সুয়ারেজ তার এই জাদুকরি ছন্দ ধরে রাখুক আগামী মৌসুমেও।
আর সুয়ারেজ? লিভারপুলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেলেও লিগ শিরোপার স্বাদ পাননি কখনোই। বার্সায় এসে দুই মৌসুমেই দুটি লিগ শিরোপাসহ জেতা হয়ে গেল ৬টি শিরোপা। সাফল্যের এই পাল্লাটা আরও ভারি হোক, সুয়ারেজ চাইবেন সেটাই।
For add
For add
For add
For add
for Add