for Add
: ৫ জুলাই ২০১৫, রবিবার, ৭:২২:৫৮
নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিকে লিওনেল মেসি, অপরদিকে আর্জেন্টিনা। একজনের জন্য একটিও শিরোপা জিততে না পারা মেসি এবং ২২ বছর শিরোপা খরা কাটানো আর্জেন্টিার লক্ষ্য এক বিন্দুতে এসে মিশে গেল। কিন্তু কেউ পারলেন না, না মেসি না তার সতীর্থ আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা। বরং, টাইব্রেকারে ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের হৃদয় ভেঙে প্রথমবারের মতো কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নিলচিলি।
মাঠে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে দুই দল সমানে সমান লড়লেও ‘ভাগ্য পরীক্ষার’ সময়টাতে চরম ব্যর্থ আর্জেন্টিনা। পেনাল্টি শুটআউটে ৪-১ গোলের এই হারে মেসি-তেভেজ-আগুয়েরো-ডি মারিয়াদের প্রজম্মকে এখন পর্যন্ত ট্রফিশূন্যই থাকতে বাধ্য করল। অথচ গত বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হারার পর দক্ষিণ আমেরিকার মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জেতার জন্য কী না করলো আর্জেন্টিনা!
শনিবার সান্তিয়াগোর এস্টাডিও ন্যাসিওনেলে নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য থাকার পর অতিরিক্ত সময়েও গোল হয়নি। টাইব্রেকারে খেলা গড়ালে গঞ্জালো হিগুয়াইন ও এভার বানেগার ব্যর্থতায় শিরোপা স্বপ্ন ভাঙে জেরার্ডো মার্টিনোর দলের।
টাইব্রেকারের প্রথম পেনাল্টি কিকে চিলির মাতিয়াস ফের্নান্দেস জোরাল শটে ওপরের বাঁ কোনা নিয়ে বল জালে জড়ান। আর্জেন্টিনার প্রথম পেনাল্টি কিক নেন মেসি; ডান দিক দিয়ে নিচু শটে বল জালে জড়ান তিনি। আর্তুরো ভিদালের পরের শটে হাত লাগিয়েও ফেরাতে পারেননি আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো। আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় স্পট কিকটি হিগুয়াইন মেরে দেন ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে।
চিলির চার্লস আরাঙ্গুইজ তৃতীয় পেনাল্টি থেকে অনায়াসে গোল করেন। আর আর্জেন্টিনার এভার বানেগার দুর্বল পেনাল্টি কিক ব্রাভো ঠেকিয়ে দিলে জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় চিলির। চতুর্থ শটে রোমেরোকে বোকা বানিয়ে সানচেজেসর বুদ্ধিদীপ্ত পেনাল্টি কিক থেকে বল ধীরে ধীরে জালে পৌঁছলে শিরোপা নিশ্চিত হয় এর আগে চারবার ফাইনালে উঠেও শূন্য হাতে ফেরা চিলির। এর আগে মাঠের মূল লড়াইয়ে গ্যালারি ভরা ভক্তদের সমর্থন নিয়ে শুরু থেকে আর্জেন্টিনার ওপর চাপ তৈরি করে স্বাগতিকরা। তবে মেসি জাদুতে প্রথম সুযোগটি তৈরি করে অতিথিরাই। আর্জেন্টিনা অধিনায়কের পাসে একটুর জন্য বল নাগালে পাননি ছুটে আসা সার্জিও আগুয়েরো।
গতি দিয়ে আর্জেন্টিনাকে পরাস্ত করার পরিকল্পনা ছিল চিলির। মার্কোস রোহো, নিকোলাস ওতামেন্দিদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিপজ্জনকভাবে প্রতিপক্ষের রক্ষণ সীমায় ঢুকে যাচ্ছিলেন স্বাগতিক খেলোয়াড়রা। কিন্তু ডি-বক্সে গিয়ে সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল এদুয়ার্দো ভারগাস, জর্জ ভালদিভিয়া, আর্তুরো ভিদালদের। বেশিরভাগ শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তারা।
সেমি-ফাইনালে জোড়া গোল করা আনহেল দি মারিয়াকে আধ ঘণ্টার মধ্যে হারায় দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া দি মারিয়ার জায়গায় নামেন এজেকুয়েল লাভেজ্জি। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে একটি করে সুযোগ আসে চিলি-আর্জেন্টিনার সামনে। ডি-বক্স থেকে দুর্বল শট নিয়ে আলেক্সিস সানচেস দারুণ একটি আক্রমণ নষ্ট করেন। এর পরপরই ডি-বক্স থেকে লাভেস্সির জোরালো শট ঠেকান ব্রাভো।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলে শুরু থেকে। ৬৬তম মিনিটে পাল্টা-আক্রমণ থেকে সানচেসের নৈপুণ্যে আচমকাই সুযোগ আসে চিলির সামনে। ডি-বক্সে গোল করার মতো জায়গায় ভিদালকে বল পাঠান আর্সেনাল তারকা। কিন্তু একটু দেরি করে নেওয়া ভিদালের শট কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন পাবলো সাবালেতা। ৮২তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ আসে সানচেসের সামনে। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে তার ভলি অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি।
যোগ করা সময়ে মেসি দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন, কিন্তু আর্জেন্টিনাকে শিরোপা এনে দেওয়ার সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন বদলি হিসেবে নামা গনসালো হিগুয়াইন। এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে মেসি তা বাড়িয়েছিলেন বাঁয়ে লাভেস্সিকে। তার নিচু ক্রস নাপোলির স্ট্রাইকার হিগুয়াইন একটুর জন্য জালে পাঠাতে পারেননি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে বল নিয়ে অনেকটা দৌড়ে গিয়েও লক্ষভ্রষ্ট শট নেন সানচেস। বাকি সময়েও কোনো দলই গোল না পাওয়ায় টাইব্রেকারে গড়ায় খেলা। আর তাতেই কোপা আমেরিকার ৯৯ বছরের ইতিহাসে যুক্ত হয় নতুন এক চ্যাম্পিয়নের নাম। ২০০৪ ও ২০০৭ সালের পর আবার কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারল আর্জেন্টিনা।
For add
For add
For add
For add
for Add