for Add
নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৯ মার্চ ২০১৬, শনিবার, ২২:৪৭:৩১
আরাফাত সানি ও তাসকিন আহমেদকে নিষিদ্ধ করার খবরে তীব্র প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে দেশের টাইগারফ্যানরা। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে আইসিসির তীব্র সমালোচনা। সমর্থকেরা বলছেন বিশ্বকাপ চলাকালীন তাসকিন-সানিকে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ এনে নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশকে দুর্বল করে দেওয়ার এক হীন চক্রান্তের অংশ বিশেষ।
আজ (শনিবার) বিকেলে আইসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানানো হয়, তাসকিন ও সানিকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রিপোর্টে জানানো হয়, বেশিরভাগ ডেলিভারিতে সানির কনুই সর্বোচ্চ সীমা ডিগ্রিও বেশি বাঁকে। আর তাসকিনের সব ডেলিভারি বৈধ ছিলো না। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে মুস্তাফিজুর রহমান খান নামে একজন ব্যারিস্টার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তাসকিনের ব্যাপারে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন হিসেবে দাবী করে কিছু যৌক্তিক প্রশ্ন তোলেন।
ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান তার স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, তাসকিন-সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বিসিবি তাকে কনসাল্টেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। পরীক্ষা চলাকালীন পুরো সময়ে তার পর্যবেক্ষনটি নিচে তুলে ধরা হলোঃ
‘দেখা যাচ্ছে যে, ইন্ডিপেন্ডেন্ট এসেসমেন্টের সময় তাসকিনকে ৯ টি বাউন্সার দিতে বলা হয়েছিল, যদিও আইসিসির স্ট্যান্ডার্ড প্রটোকল ১ এর সংযোজনীতে অন্তর্ভুক্ত রেগুলেশন্স এ শুধুমাত্র ৬ টি বাউন্সার পরীক্ষার অনুমতি দেয় এবং রেগুলেশন ২.২.৬ অনুসারে, বাউন্সারগুলো হিসেবে ধরা যাবেনা যেহেতু তাসকিনের বিরুদ্ধে রিপোর্ট বাউন্সার বলের জন্য হয়নি। যেহেতু প্রটোকল এর বিধান রেগুলেশন্স গুলোর উপরে সেহেতু প্রটোকলের নিয়মাবলিই প্রথমে বিবেচিত হওয়ার কথা ছিল।
তাসকিনের কথা স্টক ডেলিভারি এবং ইয়র্কারগুলোর লাইন ও লেন্থ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং যে ম্যাচের উপর ভিত্তি করে তার উপর অভিযোগ আনা হয়েছে সেই ম্যাচে তাসকিনের করা বলগুলো শুধুমাত্র উপরোক্ত ক্যাটাগরিরই অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় এটা স্বচ্ছ যে সেই ম্যাচ চলাকালীন সে কোন অবৈধ বোলিং একশন প্রয়োগ করেনি এবং ম্যাচ অফিশিয়ালদের রিপোর্টের অভিযোগ ভুল ছিল। রেগুলেশন এ প্লেয়ারের ম্যাচ চলাকালীন বলগুলোর প্রতি অভিযোগ যাচাই করে দেখার নিয়ম রয়েছে কিন্তু কোনমতেই একশান টেস্ট চলাকালীন কোন অবৈধ ডেলিভারি আমলে নেয়ার নিয়ম নেই।
একই সাথে এটিও দেখার বিষয় যে তাসকিনকে অতি দ্রুত ৯টি বাউন্সার করতে বলা হয়েছিল(৩ মিনিটে!) এসেসমেন্ট চলাকালে, যেটা কিনা তার ম্যাচ চলাকালীন সমযে করার কোন প্রয়োজন থাকত না । টি-২০ ম্যাচে একজন বোলার যেহেতু এক ওভারে মাত্র একটি বাউন্সারই দিতে পারেন। রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে, ৯ টির মাঝে মাত্র ৩ টি বাউন্সারের ডেলিভারি অ্যাকশনই মাত্র অবৈধ ছিল এবং শুধু তাইই না, সেই বলগুলোর গতিও সবচাইতে কম ছিল। এসেসমেন্ট এর আগে তাসকিনকে অল্প সমযে প্রচুর ভ্রমণ করতে হয়েছিল অতএব এটা স্পষ্ট যে সে ক্লান্তিতে ভুগছিল- এটা নিতান্তই স্বাভাবিক যে তার অনিয়মিত ডেলিভারি টেকনিক গুলো এমন দ্রুত সেশনে প্রয়োগের সুযোগই সে পায়নি।
দ্বিতীয়ত, রেগুলেশন ২.১.১. অনুসারে, ম্যাচ অফিশিয়ালদের রিপোর্ট হওয়ার কথা ছিল বোলারের ডেলিভারি নিয়ে সমস্ত খুঁটিনাটির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশের মাধ্যমে। একই সাথে এটাও দেখার কথা ছিল যে বোলার অ্যাকশনে সমস্যা কি সকল ডেলিভারিতেই নাকি নির্দিষ্ট এক ধরনের বলের প্রেক্ষিতে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, তাসকিনের রিপোর্টে শুধুমাত্র এটাই বলা হয়েছে যে-তার বোলিং একশান এর বৈধতা বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে। রিপোর্টে আরো দেখা যায় যে, যেখানে কিনা সুক্ষ্মভাবে সমস্যাগুলো তুলে ধরার কথা সেখানে কি সমস্যা সেটা আদৌ বলাই হয়নি। অতএব, শুরু করতে হবে এই দিয়ে যে, ম্যাচ অফিশিয়ালদের রিপোর্টের আদৌ কোন ভিত্তি আছে কিনা, এমনকি বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষাটিরই কোন ভিত্তি ছিল কিনা।
তৃতীয়ত, রেগুলেশন ২.২.১৩. অনুসারে- একজন বোলারের শুধুমাত্র যদি এক নির্দিষ্ট ধরনের বোলিং অ্যাকশন এর ডেলিভারিই যদি অবৈধ প্রমাণিত হয় কিন্তু তার স্বাভাবিক সমযের অন্যান্য ডেলিভারিগুলো যদি স্বাভাবিক প্রতীয়মান হয়, তবে তাকে আন্তর্জাতিকভাবে খেলা চালিযে যেতে দেয়া হবে। তবে সে যদি আবারো অবৈধ অ্যাকশনে নির্দিষ্ট বোলিং করে তবে তাকে আবারো পরীক্ষার জন্য ডাকা যেতে পারে। যেহেতু তাসকিনের স্টক বোলিং সম্পূর্ণ বৈধ এবং ৯টির মাঝে মাত্র ৩টি বাউন্সার এর অ্যাকশন অবৈধ প্রতীয়মান হয়েছে, তাকে বড়জোর সাবধান করা যেতে পারে, নিষিদ্ধ নয়।
সহজ কথায়, তাসকিনকে অবিচারের মাধ্যমে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।’
তার লেখার শেষদিকে তিনি রেগুলেশন ২.৩.১ এর আওতায় এই কেসটি রিভিউ করবার পরামর্শ দেন। আর তাতে ফল না এলে এটিকে সুইজারল্যান্ডের কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্টসে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেন মোস্তাফিজুর। সুইজারল্যান্ডের কোর্ট অফ আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্টস খেলাধুলা বিষয়ক আন্তর্জাতিক আপিল আদালতঃ
http://www.tas-cas.org/en/index.html
যদি ব্যারিস্টার মুস্তাফিজের যুক্তি সত্য হয়, তবে নিশ্চিতভাবেই টাইগারদের সামনে কঠিন দিন আসছে। কারন তাসকিনের বিরদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং তার ফলাফল দেখে খুব সহজেই অনুমান করা যায় যে, সন্দেহের বিষবাষ্প এখানেই থামবে না। বরং এটা আরো ছড়াবে সামনে। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরুদ্ধে এতো বড় একটা অভিযোগ আসার পর বিসিবি কি অবস্থান নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়!
ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খানের লেখার লিংকঃ
https://www.facebook.com/mustafizur.rahmankhan.3/posts/948942668507229
For add
For add
For add
For add
for Add