for Add
স্পোর্টস ডেস্ক : ৭ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার, ০:০১:১৬
সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ড নৈপুন্যে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এড়ালো স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৫০ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। ব্যাট হাতে ৭৫ রান করার পর বল হাতে ৩৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন সাকিব। এ ম্যাচে ওয়ানডেতে ৩শ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় ইংল্যান্ডের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ।
সাকিব, মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৮.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান করেছিল বাংলাদেশ। সাকিব ৭৫, মুশফিক ৭০ ও শান্ত ৫৩ রান করেন। জবাবে ৪৩.১ ওভারে ১৯৬ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
প্রথম দুই ওয়ানডের মত চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও টস জিতেন স্বাগতিক অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১৭ রানের মধ্যে লিটন দাসকে নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তামিম।
প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে লিটন খালি হাতে ও তৃতীয় ওভারের শেষ বলে তামিমকে ১১ রানে সাজঘরে পাঠান ইংল্যান্ডের পেসার স্যাম কারান।
শুরুতেই চাপে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরাতে সাবধানে এগুতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। ৭৮ বল খেলে জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি করেন তারা। ২২তম ওভারে বাংলাদেশের রান ১’শতে নেন শান্ত ও মুশফিক। ২৪তম ওভারে ১৮ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি করতে ৭০ বল খেলেন শান্ত। এই সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতেই ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক করেছিলেন তিনি।
২৫তম ওভারে মুশফিকের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন শান্ত। ৫টি চারে ৭১ বলে ৫৩ রান করেন শান্ত। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১২৮ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন শান্ত ও মুশফিক।
শান্ত ফেরার ওভারেই ক্যারিয়ারে ৪৩তম অর্ধশতকের দেখা পান মুশফিক। ৬৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরির পর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মুশি। ৩৩তম ওভারে ইংল্যান্ডের স্পিনার আদিল রশিদের গুগলিতে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। ৬টি চারে ৯৩ বলে ৭০ রান করেন তিনি।
মুশফিকের বিদায়ে উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লং-অন দিয়ে ছক্কা মারার এক বল পরই রশিদের শিকার হন তিনি। ৮ রান করেন মাহমুদুল্লাহ।
মাহমুদুল্লাহ ফেরার পর ৫৫ বল খেলে ৫২তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন সাকিব। এরপর আফিফ ১৫, মেহেদি হাসান মিরাজ ৫ ও তাইজুল ইসলাম ২ রানে আউট হলেও বাংলাদেশকে আড়াইশ রান এনে দেয়ার পথেই ছিলেন সাকিব। কিন্তু ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২৪৬ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে ইংল্যান্ডের পেসার জোফরা আর্চারের বলে আউট হন সাকিব। ৭টি চারে ৭১ বলে ৭৫ রান করেন তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে মুস্তাফিজুর রহমানকে শিকার করে বাংলাদেশকে ২৪৬ রানে গুটিয়ে দেন আর্চার। আর্চার ৩টি, কারান ও রশিদ ২টি করে উইকেট নেন।
২৪৭ রানের টার্গেটে ইংল্যান্ডকে ভাল শুরু এনে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও ফিল সল্ট। ৫৩ বলে ৫৪ রান যোগ করেন তারা। নবম ওভারের শেষ বলে দ্বিতীয়বারের মত আক্রমণে এসে সল্টকে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন সাকিব। ৭টি চারে ২৫ বলে ৩৫ রান করেন সল্ট। পরের ওভারে ডেভিড মালানকে খালি হাতে বিদায় করেন পেসার এবাদত হোসেন। ১১তম ওভারে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রয়কে বোল্ড করে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলেন সাকিব। ১৯ রান করেন রয়। ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা।
চতুর্থ উইকেটে ৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে চাপমুক্ত করেন জেমস ভিন্স ও কারান। ২৩ রান করা কারানের উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। উইকেটে সেট ব্যাটার ভিন্সকে ৩৮ রানে থামিয়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান সাকিব।
সাকিবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১২৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এরপর ১৭৪ রানে ইংল্যান্ডের অষ্টম উইকেটের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের পথ সহজ করে দেন তাইজুল ও এবাদত। মঈনকে ২ রানে এবাদত এবং বাটলারকে ২৬ ও রশিদকে ৮ রানে শিকার করেন তাইজুল।
রেহানকে ২ রানে আউট করে ওয়ানডেতে ৩শ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব। শেষ ব্যাটার ওকসকে ৩৪ রানে থামিয়ে ৪১ বল বাকী থাকতে ইংল্যান্ডের ইনিংসে ১৯৬ রানে শেষ করেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১০ ওভারে ৩৫ রানে ৪ উইকেট নেন সাকিব। তাইজুল-এবাদত ২টি করে উইকেট নেন। -বাসস
আগামী ৯ মার্চ থেকে চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ
তামিম ইকবাল ক ভিন্স ব কারান ১১
লিটন দাস ক বাটলার ব কারান ০
নাজমুল হোসেন শান্ত রান আউট (বাটলার/রেহান) ৫৩
মুশফিকুর রহিম বোল্ড ব রশিদ ৭০
সাকিব আল হাসান ক রয় ব আর্চার ৭৫
মাহমুদুল্লাহ বোল্ড ব রশিদ ৮
আফিফ হোসেন ক মঈন ব ওকস ১৫
মেহেদি হাসান মিরাজ ক এন্ড ব রেহান ৫
তাইজুল ইসলাম ক এন্ড ব আর্চার ২
এবাদত হোসেন অপরাজিত ১
মুস্তাফিজুর রহমান এলবিডব্লু ব আর্চার ০
অতিরিক্ত (লে বা-২, ও-৪) ৬
মোট (অলআউট, ৪৮.৫ ওভার) ২৪৬
উইকেট পতন : ১/১ (লিটন), ২/১৭ (তামিম), ৩/১১৫ (শান্ত), ৪/১৫৩ (মুশফিক), ৫/১৬৩ (মাহমুদুল্লাহ), ৬/২১২ (আফিফ), ৭/২১৯ (মিরাজ), ৮/২২৭ (তাইজুল), ৯/২৪৬ (সাকিব), ১০/২৪৬ (মুস্তাফিজ)।
বোলিং : কারান : ৮-১-৫১-২ (ও-৩), ওকস : ৮-০-২৭-১, আর্চার : ৮.৫-১-৩৫-৩ (ও-১),
মঈন : ৯-০-৪৮-০, রেহান : ১০-২-৬২-১, রশিদ : ৫-০-২১-২।
ইংল্যান্ড
জেসন রয় বোল্ড ব সাকিব ১৯
ফিল সল্ট ক মাহমুদুল্লাহ ব সাকিব ৩৫
ডেভিড মালান ক মাহমুদুল্লাহ ব এবাদত ০
জেমস ভিন্স ক মুশফিক ব সাকিব ৩৮
কারান ক লিটন ব মিরাজ ২৩
জশ বাটলার এলবিডব্লু ব তাইজুল ২৬
মঈন বোল্ড ব এবাদত ২
ওকস ক এন্ড ব মুস্তাফিজ ৩৪
রশিদ বোল্ড ব তাইজুল ৮
রেহান ক মিরাজ ব সাকিব ২
আর্চার অপরাজিত ৫
অতিরিক্ত (ও-৪) ৪
মোট (অলআউট, ৪৩.১ ওভার) ১৯৬
উইকেট পতন : ১/৫৪ (সল্ট), ২/৫৫ (মালান), ৩/৫৫ (রয়), ৪/১০৪ (কারান), ৫/১২৭ (ভিন্স), ৬/১৩০ (মঈন), ৭/১৫৮ (বাটলার), ৮/১৭৪ (রশিদ), ৯/১৮২ (রেহান), ১০/১৯৬ (ওকস)।
বোলিং : মুস্তাফিজ : ৬.১-০-২৫-১ (ও-১), তাইজুল : ১০-০-৫২-২, এবাদত : ৯-১-৩৮-২ (ও-২), সাকিব : ১০-০-৩৫-৪, মিরাজ : ৮-০-৪৬-১ (ও-১)।
ফল : বাংলাদেশ ৫০ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলো ইংল্যান্ড।
For add
For add
For add
For add
for Add