for Add
নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, মঙ্গলবার, ২২:২৭:৪৫
ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের কোনো ব্যাটারই লম্বা করতে পারলেন না ইনিংস। উইকেটে থিতু হয়ে একের পর তারা শিকার হলেন সানজামুল ইসলামের। এই বাঁহাতি স্পিনার ৮ উইকেট তুলে নিয়ে লক্ষ্যটা রাখলেন একদম নাগালের মধ্যে। রান তাড়ার বাকি কাজটা সহজেই সারলেন তার সতীর্থরা। জয় তুলে নিয়ে বিসিবি উত্তরাঞ্চল বাঁচিয়ে রাখল ফাইনালে খেলার ক্ষীণ আশা। অপর ম্যাচে অমিত হাসান ও তৌহিদ হৃদয়ের সেঞ্চুরিতে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল।
মঙ্গলবার বিসিএলের তৃতীয় ও শেষ রাউন্ডের তৃতীয় দিনে রাজশাহীর শহিদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে জিতেছে উত্তরাঞ্চল। আগের দিনের বিনা উইকেটে ১৭ রান নিয়ে খেলতে নামা পূর্বাঞ্চল দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ২৫৪ রানে। ফলে প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রানের বড় লিড নেওয়া উত্তরাঞ্চল জয়ের জন্য পায় ১১১ রানের লক্ষ্য। ৪ উইকেট খুইয়ে তা ছুঁয়ে ফেলে দলটি।
৯৮ রান খরচায় ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন সানজামুল। প্রথম ইনিংসে তিনি দখল করেছিলেন ৩ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ইনিংসে ২৪তম বারের মতো ৫ উইকেট শিকারের পাশাপাশি সপ্তমবারের মতো ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি। চলতি বিসিএলে এটাই কোনো বোলারের ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার প্রথম ঘটনা। শফিকুল ইসলাম বাকি ২ উইকেট নেন ৫৮ রানে।
দিনের চতুর্থ ওভারেই পূর্বাঞ্চলের ইনিংসে আঘাত হানেন পেসার শফিকুল। মোহাম্মদ আশরাফুলকে তিনি ফেলেন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে। এরপর মঞ্চে আবির্ভূত হন সানজামুল। টানা ৫ উইকেট তুলে নেন তিনি।
প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম শিকার ধরেন সানজামুল। শামসুর রহমান শুভ হন স্টাম্পড। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর নিবেদন দেখান শাহাদাত হোসেন ও আফিফ হোসেন। তাদের ৫২ রানের ইনিংস সর্বোচ্চ জুটি ভেঙে পরপর দুই ওভারে দুজনকে বিদায় করেন সানজামুলই। আফিফের পর শাহাদাতও তালুবন্দি হন জুনায়েদ সিদ্দিকির। মাহমুদুলকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন সানজামুল।
টি-টোয়েন্টি ঢঙে খেলেন পূর্বাঞ্চলের পরের ব্যাটাররা। উইকেটে টিকে থাকার চেয়ে দ্রুত রান তোলাতেই মনোযোগ ছিল তাদের। প্রায় দুইশ স্ট্রাইক রেটে খেলতে থাকা প্রিতম কুমার শফিকুলের শিকার হওয়ার পর সানজামুল ফেরে একটানা উইকেট নেন। নাঈম হাসান ও ইফরান হোসেন ক্যাচ দেওয়ার পর এলবিডব্লিউ হন আসাদুজ্জামান পায়েল।
আটে নেমে অফ স্পিনার নাঈম দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন ৩৭ বলে। আফিফ খেলেন ৩৮ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। প্রিতমের ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে ৩৩ রান। নয়ে নেমে তানভীর ইসলাম অপরাজিত থাকেন ২৪ বলে ৩০ রানে।
জবাব দিতে নেমে শুরুতেই তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় উত্তরাঞ্চল। তাকে এলবিডব্লিউ করার পর তানবির হায়দারকেও টিকতে দেননি বাঁহাতি স্পিনার তানভীর। এই ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন জুনায়েদ ও নাঈম ইসলাম। তারা ৩ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরলেও জয় ততক্ষণে উত্তরাঞ্চলের হাতের নাগালে। বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
ওপেনার জুনায়েদ ৭০ বলে করেন ৩৮ রান। নাঈমের ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ২৮ রান। পূর্বাঞ্চলের হয়ে ৩৫ রানে ২ উইকেট নেন তানভীর। একটি করে উইকেট পান আফিফ ও নাঈম।
৩ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে বিসিএলের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে গেছে উত্তরাঞ্চল। সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট পাওয়া পূর্বাঞ্চলের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চলের ফাইনালে ওঠা নির্ভর করছে অপর ম্যাচের ফলের উপর। দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের লড়াই ড্র হলে এই দুই দলই খেলবে ফাইনালে। উত্তরাঞ্চলের জন্য শঙ্কার বিষয় হলো, ড্রয়ের দিকেই এগোচ্ছে ওই ম্যাচটি। ২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চল, ৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে মধ্যাঞ্চল। ম্যাচ ড্র হলে দুই দলই পাবে ২ পয়েন্ট করে।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন দিন পেরিয়ে গেলেও দুই দলের একটি করে ইনিংসই এখনও শেষ হয়নি। মধ্যাঞ্চলের ৪৮১ রানের জবাবে দক্ষিণাঞ্চলের রান ৫ উইকেটে ৩৮১। হাতে ৫ উইকেট নিয়ে তার পিছিয়ে আছে ঠিক ১০০ রানে।
এবারের আসরে নিজেদের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ পান তৌহিদ ও অমিত। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তরুণ তৌহিদ করেন ১৫৫ বলে ১১২ রান। ১৩ চারের সঙ্গে ৪ ছক্কা মারেন তিনি। গত ম্যাচেই প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপান্তরিত করেছিলেন তিনি। ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে অমিত ১৭ চারের সাহায্যে ২৭৫ বলে করেন ১১৭ রান। তিনিও সেঞ্চুরি করেছিলেন আগের রাউন্ডে।
দ্বিতীয় দিনের ১ উইকেটে ৯২ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল দক্ষিণাঞ্চল। পিনাক ঘোষ আগের ৬৭ রানকে টেনে নিতে পারেননি বেশিদূর। ব্যক্তিগত ৭৪ রানে তিনি শিকার হন শুভাগত হোমের। এরপর ২০১ রানের বিশাল জুটি গড়েন অমিত ও তৌহিদ। প্রথমে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান তৌহিদ, পরে আগের দিনের ২৫ রান নিয়ে নামা অমিত।
পরপর দুই বলে তারা ফেরেন সাজঘরে। অমিত আউট হন হাসান মুরাদের বলে। তৌহিদকে বিদায় করেন নাজমুল ইসলাম অপু। থিতু হয়ে ইনিংস টানতে পারেননি পারেননি নাহিদুল ইসলাম। তাকেও ঝুলিতে ঢোকান মুরাদ। দিন শেষে জাকির হাসান ৭২ বলে ৩৬ ও অধিনায়ক ফরহাদ রেজা ২৮ বলে ১২ রানে অপরাজিত আছেন।
Tags: বাংলাদেশ-ক্রিকেট-লিগ, বিসিএল
For add
For add
For add
For add
for Add