for Add
নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৮ অক্টোবর ২০২১, সোমবার, ৩:৪৪:৪৫
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশ ৬ রানে স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে গেছে। এর ফলে টাইগারদের কাঙ্খিত সুপার টুয়েলভে উঠার পথ অনেকটা কঠিন হয়ে পড়লো। লাল-সবুজের দল যদি পরবর্তী দুটি ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিততে পারে তাহলেই তারা সুপার টুযেলভের টিকিট পাবে।
বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে আগামী ১৯ অক্টোবর স্বাগতিক ওমান এবং ২১ অক্টোবর পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মোকাবিলা করবে। এ দুটি ম্যাচে টাইগারদের বড় জয়ই পৌঁছে দিতে পারে কাঙ্খিত সুপার টুয়েলভে। কিন্তু কোন কারণে যদি ম্যাচ পরিত্যাক্ত হয় বা হেরে যায় তাহলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেই বিদায় নিতে হবে। কাজেই সামনের দুটি ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য রীতিমতো বাঁচা-মরার লড়াই।
ওমানের আল আমেরাতে ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রোববার টস জিতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। শুরুতে ব্যাটিং না করে প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফিল্ডিং করতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু স্কটল্যান্ডের করা ১৪০ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানে থেমে গেছে। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় লজ্জাজনক এ পরাজয় বরণ করতে হয়।
এর আগে ২০১২ সালে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৩৪ রানে। স্কটল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করে ১৬২ রান। রিচি বেরিংটন করেন ১০০ রান। জবাবে বাংলাদেশ ১৮ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ১১৮ রানে। সে ধারাবাহিকতা ৯ বছর পরও ধরে রাখল টাইগাররা। বিশ্বকাপের মঞ্চে এসে নিজেদের মেলে ধরতে পারলো না স্কটল্যান্ডের মত দলের সামনে।
শুরুতেই দুই ওপেনারের ব্যর্থতায় বিপর্যয় শুরু হয়। পরবর্তীতে সাকিব আর মুশফিকের মাত্রাতিরিক্ত স্লো ব্যাটিংই বাংলাদেশের পরাজয়কে আরো বেশি তরান্বিত করে। সাকিব ২৮ বলে করেছেন ২০ রান।
জয়ের জন্য ১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অফফর্ম থেকে বের হতে পারেননি সৌম্য সরকার। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরের পথ ধরেন সৌম্য। জশ ড্যাভেকে মিডউইকেটে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার, ৫ বলে করেছেন ৫ রান।
এরপর লিটন দাসও হতাশ করেছেন। তারও সংগ্রহ ৭ বলে মাত্র ৫ রান। ব্র্যাড হোয়েল স্লোয়ার বুঝতে না পেরে মিডঅফে ক্যাচ তুলে দেন লিটন।
১৮ রানে দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে অভিজ্ঞ সাকিব আর মুশফিক ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ছিল । এ দু’জনের ব্যাটে ৪৭ রানের জুটি গড়ে ওঠে। লেগ স্পিনার ক্রিস গ্রিভসের বলে ম্যাকলয়েডের হাতে ক্যাচ দেন সাকিব।
দুই ওপেনার এবং সাকিব যখন সাজঘরে ফিরে যান, তখন উইকেটে আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলছিলেন মুশফিক। কিন্তু সেই প্রদিপও নিভে গেলো এক ফুৎকারে। ৩৬ বলে ৩৮ রান করে ফিরে যান মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ক্রিস গ্রিভসের লেগ ব্রেক গুগলিতে বোল্ড হন।
মারকুটে ব্যাটসম্যান আফিফ মাঠে নেমে দুটি বাউন্ডারি মেরে আউট হয়ে যান ১২ রান করে। এর পর প্রস্তুতি ম্যাচে ৭ ছক্কা মেরে তোলপাড় তুলে দেয়া সোহানও যোগ দিলেন কেবল আসা-যাওয়ার মিছিলে। তিন বল নষ্ট করে দিয়ে গেলেও কোনো রান পাননি।
একটি ছক্কা মেরে আশার আলো জ্বেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু শেষ মুহূর্তে যখন দলের খুব প্রয়োজন, তখনই আউট হয়ে যান ব্র্যাড হুইলের বলে ম্যাকলয়েডের হাতে ক্যাচ দিয়ে। শেষ মুহূর্তে মেহেদি ৫ বলে ১৩ এবং সাইফউদ্দিন ২ বলে ৫ রান নিয়ে চেষ্টা করেন জয় তুলে নেয়ার। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়নি।
ব্র্যাড হুইল, জস ডেভি, লেগ স্পিনার ক্রিস গ্রিভস এবং মার্ক ওয়াটের দাপুটে বোলিংয়ে বাংলাদেশ নড়বড়ে হয়ে উঠে। এ পরাজয়ের ফলে সুপার টুয়েলভে খেলার স্বপ্নে বড় একটি ধাক্কা খেলো টাইগাররা।
এর আগে মেহেদি-সাকিব-মোস্তাফিজদের তোপে ৯ উইকেটে ১৪০ রানেই স্কটল্যান্ড থেমে যায়।
তাসকিনের বোলিং আক্রমণ দিয়ে শুরু হয় প্রতিপক্ষকে অল্প রানে বেধে দেয়ার কৌশল। প্রথম ওভারে তাসকিন দেন ৪ রান। মোস্তাফিজ পরের ওভারে আরও মিতব্যয়ী ছিলেন। খরচ করেন মাত্র ১ রান।
তৃতীয় ওভারে আবারও বোলার বদল। এবার সাইফউদ্দিনকে আক্রমণে আনেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম তিন বল ডট দিয়ে চতুর্থ বলেই সাফল্য পান সাইফউদ্দিন। টাইগার পেসার পরিষ্কার বোল্ড করেছেন কাইল কোয়েতজারকে ৭ বলে ০ রানে।
ক্রস খেলতে গিয়েই আউট হয়েছেন ম্যাথিউ ক্রস। ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাহেদি এলবিডব্লিউ করেছেন তাকে। এর তিন বল পর তিনি বোল্ড করেছেন ভয়ংকর জর্জ মুনসেকেও ২৩ বলে ২৯ রানে।
সাকিবকে স্কটিশ ব্যাটসম্যান স্কট বেরিংটন যেভাবে হাঁকিয়েছিলেন তাতে বলটি ছক্কাই হতে পারতো। কিন্তু দারুণভাবে বাউন্ডারিতে সেটে ধরে ফেলেন আফিফ। পরে ভারসাম্য রাখতে না পেরে বল ওপরে তুলে চলে যান বাউন্ডারির বাইরে। সেখান থেকে এসে আবার দারুণভাবে লুফে নেন ক্যাচটি।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে জোড়া আঘাত হেনেছিলেন মেহেদি। সাকিব একাদশতম ওভারে এসে জোড়া আঘাত হানেন। বেরিংটনের পর তাকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে লিটন দাসের ক্যাচ হন মাইকেল লিস্ক।
পরের ওভারে আবার মেহেদি। এবার তাকে কাট করতে গিয়ে বোল্ড কলাম ম্যাকলিওড। ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড। সেখান থেকে মার্ক ওয়াট আর ক্রিস গিভসের মারমুখি ব্যাটিং ৩৪ বলের জুটিতে যোগ করেন ৫১ রান।
শেষ পর্যন্ত ১৮তম ওভারে এসে সেই জুটি ভেঙেছেন তাসকিন। ১৭ বলে ২২ করা ওয়াট বাউন্ডারিতে হয়েছেন সৌম্যের ক্যাচ।
তবে গ্রিভস ঠিকই মারকুটে ব্যাটিং করেছেন। ২৭ বলেই তিনি করেন ৪৫ রান। শেষ ওভারে এসে এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজ। তার ক্যাচটি নেন বাউন্ডারিতে সাকিব। পরের বলে আরো এক উইকেট কাটার মাস্টারের, বোল্ড করেছেন জশ ড্যাভেকে। তবে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেও তা হয়নি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মেহেদি। ১৯ রানে ৩টি উইকেট নেন এ অফস্পিনার। ১৭ রানে সাকিবের শিকার ২ উইকেট। মোস্তাফিজ ২ উইকেট নিয়েছেন ৩২ রান খরচায়। একটি করে উইকেট শিকার করেন তাসকিন আর সাইফউদ্দিন।
For add
For add
For add
For add
for Add