for Add
: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শনিবার, ১৩:৫৭:৫৭
নিজস্ব প্রতিবেদক : আর কয়েক ঘন্টা পরই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট যুদ্ধ। এশিয়া কাপ ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষনীয় এ ম্যাচ ঘিরে এখন উত্তেজনা কেবল দুই দেশের ক্রীড়ামোদীদের মধ্যেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। কে ফেভারিট ? কে জিতবে এ মহারণে-চারিদিকে চলছে এমন চুলচেরা বিশ্লেষন। দুই ক্রিকেট পরাশক্তি দেশের সাবেকদের মুখেও ফুটছে তর্কের খৈ। ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী এ মহারণে এগিয়ে রাখছেন নিজ দেশকেই। আনন্দবাজার পত্রিকায় কলামে সৌরভ গাঙ্গুলী লিখেছেন, ‘পাকিস্তানকে সম্মান করেই বলছি ভারত এখন লড়াইয়ে অনেক এগিয়ে।’
সৌরভ গাঙ্গুলী লিখেছেন-প্রতিটা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মতো এশিয়া কাপে দু’দলের লড়াই নিয়েও উত্তেজনা আর প্রত্যাশার শেষ নেই। এ ম্যাচে স্নায়ুর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়। দু’দেশের ক্রিকেটার শুধু নয়, কোটি কোটি সমর্থকের আবেগ জড়িয়ে থাকে এই ম্যাচের সঙ্গে। এখন ভারত ভাল ক্রিকেট খেলছে। টিমের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। দলের প্রধান মুখ, ব্যাটসম্যান হোক বা বোলার, সবাই দুর্দান্ত ফর্মে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ভারত নিখুঁত পারফর্ম করেছে। ওদিকে পাকিস্তানে তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার সহাবস্থান। খাতা-কলমে ওদের বোলিংটাকে বেশ শক্তিশালী দেখায় কিন্তু ব্যাটিংকে এই ম্যাচের চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে।
একটা সময় ছিল যখন পাকিস্তানই বেশির ভাগ ম্যাচে ভারতকে হারাত। তবে গত দশ-বারো বছর এই যুদ্ধে ভারত একপেশে কর্তৃত্ব রেখে যাচ্ছে। মাঠে শুধু ক্রিকেটীয় দক্ষতায় যে ভারত এগিয়ে রয়েছে, তা কিন্তু নয়। বিপক্ষের উপর ওরা মানসিক ভাবেও রাজত্ব করেছে। পাকিস্তানি প্লেয়ারদের সম্মান করেই বলছি, এই দশ-বারো বছরে যে সব ক্রিকেটার ভারতীয় দলে খেলেছে, তারা ওদের পাকিস্তানি সতীর্থদের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। শচীন টেন্ডুলোর, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষ্মণ, বীরেন্দ্র শেবাগ, অনিল কুম্বলে, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আর বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটার ওদের আসেনি। পাকিস্তান আগে গর্ব করে বলতে পারত যে, জাভেদ মিয়াঁদাদ, ওয়াসিম আক্রাম, ওয়াকার ইউনুস, ইনজামাম উল হক, সাকলাইন মুস্তাক, মুহাম্মদ ইউসুফ আর সাঈদ আনোয়ারের মতো ক্রিকেটার এক সঙ্গে খেলেছে। কিন্তু এই প্লেয়াররা অবসর নেওয়ার পরে পাকিস্তানের হাতে ধারাবাহিক ভাবে এত ভাল জাতের ক্রিকেটার আসেনি। আর তাই দুটো টিমের মধ্যে ব্যবধান ক্রমশ বেড়েছে।
নেতৃত্বের ব্যাপারটাও পাকিস্তানকে খুব ভুগিয়েছে। একটা সময় ওদের অধিনায়ক ছিলেন ইমরান খানের মতো গ্রেট প্লেয়ার। তার পরে জাভেদ ভাই, ওয়াসিম আর ওয়াকার। নেতা হিসেবে এমন কি ইনজামামও যথেষ্ট ভাল ছিল। ব্যক্তিগতভাবে এরা তীব্র প্রতিযোগী ছিল। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিত। নিজেদের পারফরম্যান্স দিয়ে টিমকে টেনে তুলত। নিজেদের সব সতীর্থের কাছ থেকেও সেরাটা দাবি করত। পাকিস্তানি ক্রিকেটের এই দিকটাতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এক বার ধোনিকে দেখুন। কী দুর্দান্ত সংযমের সঙ্গে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। তা হলেই তফাতটা বুঝতে পারবেন।
কয়েকটা ম্যাচে ওদের টিমটাকে দেখে মনে হয়েছে যে এরা ড্রেসিংরুমেই হেরে বসে আছে। আর এখানেই কিন্তু অধিনায়কের চ্যালেঞ্জ। নিজের টিমকে মানসিক ভাবে টেনে তোলা। ওদের মনে এই বিশ্বাসটা ঢুকিয়ে দেওয়া যে, বিপক্ষকে কাঁদিয়ে ছাড়ার মতো ক্ষমতা ওদের আছে। অভিজ্ঞ আফ্রিদি কি এই কাজ করতে পারবে? দেখার অপেক্ষায় আছি।
ভারত কিন্তু পুরো ছন্দে রয়েছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভাল একটা ইনিংস খেলল রোহিত। ইনিংসটা খুব সুন্দর। এই ম্যাচে ভাল করার জন্য মুখিয়ে থাকবে বিরাট, রায়না, ধোনি, যুবরাজ, অশ্বিন আর নেহরা। পাকিস্তানের বোলিংয়ে যথেষ্ট বিষ আছে। ওহাব রিয়াজ, ইরফান, আমের আর আফ্রিদি বেশ ভাল কম্বিনেশন। আমি আমেরকে খুব খুঁটিয়ে দেখব। পাঁচটা বছর ও ক্রিকেটের বাইরে ছিল। এই পর্যায়ে ভাল খেলার ক্ষমতা ওর এখনও আছে কি না, দেখতে চাই।
ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের মতো এই পিচেও যদি সবুজ আভা থাকে, তা হলে পাক পেসারদের সতর্ক ভাবে সামলাতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল— নেহরার সুইং, বুমরাহের নিখুঁত নিশানা আর অশ্বিনের চাতুরির সামনে কি পাকিস্তান ব্যাটিং দাঁড়াতে পারবে? দুটো টিমের মধ্যে এটাই কিন্তু তফাত গড়ে দিতে পারে।
For add
For add
For add
For add
for Add