for Add
নিজস্ব প্রতিবেদক : ৭ ডিসেম্বর ২০২২, বুধবার, ৬:৫১:৫৫
রামোসের হ্যাটট্রিকের উপর ভর করে ১৬ বছর পর বিশ্বকাপের কোয়াটার্র ফাইনালে উঠেছে রোনালদোর পতুর্গাল। আজ শেষ ষোলোর শেষ ম্যাচে পতুর্গাল ৬-১ গোলে সুইজারল্যান্ডকে পরাজিত করে এ কৃতিত্ব দেখায়। ২০০৬ সালের পর শেষ আট নিশ্চিত করলো রোনালদোরা।
এক তরফার এ ম্যাচে ১৭, ৫১ ও ৬৭ মিনিটে গোল করে হ্যাটট্রিক করেন রামোস। এবারের বিশ্বকাপে এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক। ম্যাচের শুরুর একাদশে না থাকলেও ৭৩ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন রোনালদো।
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে গুঞ্জন ছিল রোনালদোকে নিয়ে। শেষমেষ রোনালদোর না খেলার শঙ্কাই সত্যি হয়। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে দলের অধিনায়ক এবং দেশের হয়ে সবোর্চ্চ ম্যাচ ও গোলের মালিক রোনালদোকে প্রথম একাদশে রাখেননি পতুর্গাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। সর্বশেষ ২০০৪ সালে ইউরোতে রাশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতে বেঞ্চে বসেছিলেন রোনালদো।
লুসাইল স্টেডিয়ামে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল রোনালদোবিহীন পতুর্গাল। একাদশে এ তারকার অনুপুস্থিতি টেরই পেতে দেননি রামোস-পেপেরা। নিজেদের সীমানায় ব্লক তৈরি করে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে পতুর্গাল। প্রথম ১৫ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের সীমানায় দু’বার আক্রমণ করলেও তা ভেস্তে গেছে বক্সের ভেতর।
তবে প্রথম গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পতুর্গালকে। ১৭ মিনিটেই গোলের আনন্দে নেচে উঠে পতুর্গাল। সুইজারল্যান্ডের বক্সের বাইরে থেকে দারুণ বোঝাপড়ায় বক্সের ভেতরে থাকা স্ট্রাইকার রামোসকে বল পাস দেন আক্রমণভাগের আরেক খেলোয়াড় হুয়াও ফেলিক্স। বলকে হালকা থামিয়ে বাঁ পায়ে দুদার্ন্ত এক শটে সুইজারল্যান্ডের বারের একদম কণার্র দিয়ে বলকে জালে পাঠান রামোস। সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সোমারের তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না।
১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় পতুর্গাল। ২২ মিনিটে রামোসের পাস থেকে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন মিডফিল্ডার ওটাভিও। তবে সেটি জমা পড়ে সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষকের হাতে।
পরের মিনিটে আবারও আক্রমণ চালায় পতুর্গাল। মাঝমাঠ থেকে বাতাসে ভাসিয়ে রামোসকে বল দেন পেপে। উড়ে আসা বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি বক্স থেকে রামোসের নেয়া শটও ধরে ফেলেন সুইস গোলরক্ষক।
৩০ মিনিটে প্রথমবার গোলের ভাল সুযোগ পায় সুইজারল্যান্ড। ২৫ গজ দূর থেকে ফ্রি কিক পায় তারা। মিডফিল্ডার জিহার্দান শাকিরির শট পতুর্গালের গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তার হাতে লেগে বার ঘেষে বাইরে চলে যায়।
রামোসের গোলে এগিয়ে থাকলেও ব্যবধান দ্বিগুণে মরিয়া ছিল পতুর্গাল। ৩৩ মিনিটে পেপের দুদার্ন্ত হেডে দ্বিতীয় গোল পায় পতুর্গিজরা। মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের উড়ে আসা বলে অসাধারণ টাইমিংয়ে সুইজারল্যান্ডের দুই খেলোয়াড়ের মাঝে লাফিয়ে হেডে গোল করেন ৩৯ বছর বয়সী পেপে। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করার অনন্য কীর্তি গড়েন পেপে।
৪৩ মিনিটে অল্পের জন্য গোল পায়নি পতুর্গাল। ফার্নান্দেসের পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পেয়ে বাঁ পায়ের শট নেন রামোস। তার শট বাঁ দিকে ঝাপিয়ে পড়ে পতুর্গালকে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত করেন সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষক।
রামোস ও পেপের জোড়া গোলে ২-০ হোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে পতুর্গাল। এই অর্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিল পতুর্গাল। ৫৩ শতাংশ বল তাদের আয়ত্বে ছিল। সুইজারল্যান্ডের গোলমুখে ৬টি শট নেয় পতুর্গাল। এরমধ্যে ৫টি ছিল টার্গেটে।
বিরতির পর মাঠে নেমেই তৃতীয় গোল পেয়ে যায় পতুর্গাল। এবারও গোলের মালিক রামোস। ৫১ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে ডিফেন্ডার দিয়োগো ডালটের ক্রস থেকে আলতো ছোঁয়ায় সুইস গোলরক্ষক সোমারের দুই পায়ের নিচ দিয়ে বলকে জালে পাঠান রামোস (৩-০)।
রামোসের গোলের রেশ কাটতে না কাটতে পতুর্গালকে চতুর্থ গোল এনে দেন ডিফেন্ডার রাফায়েল গুয়েরেইরো। ৫৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে মধ্য মাঠ থেকে বল নিয়ে ডি বক্সের ভেতরে থাকা গুয়েরেইরোকে বল দেন রামোস। ফাঁকায় থাকা গুয়েরেইরো তাড়াহুড়া না করে সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে বলকে জালে পাঠান (৪—০)।
এক হালি গোল হজমের পর ৫৮ মিনিটে প্রথম গোল পায় সুইজারল্যান্ড। কণার্র থেকে উড়ে আসা বলে বাঁ দিকের গোলবার দিয়ে গোল আদায় করে নেন সুইস ডিফেন্ডার ম্যানুয়েল আকাঞ্জি।
৬৭ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন রোনালদোর পরিবর্তে দলে জায়গা পাওয়া ২১ বছর বয়সী রামোস। ফেলিক্সের কাছ থেকে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে শট নিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন রামোস।
পতুর্গালের সব গোলেই বেঞ্চ ছেড়ে উঠে এসে উদযাপন করেছেন রোনালদো। ৫-১ গোলে এগিয়ে পতুর্গালের জয় যখন নিশ্চিত তখন ৭৩ মিনিটে রোনালদোকে মাঠে নামান পতুর্গাল কোচ। ফেলিক্সের পরিবর্তে মাঠে নামেন রোনালদো। সিআর সেভেন মাঠে নামতেই উল্লাসে মুখরিত হয়ে উঠো পুরো স্টেডিয়াম।
৮৪ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে সুইজারল্যান্ডের বক্সের ভেতর ঢুকে গোল করেন রোনালদো। কিন্তু সেটি অফসাইডে বাতিল হয়।
ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ডালটের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ শটে সুইজারল্যান্ডের জালে ষষ্ঠবারের মতো বল পাঠান বদলি হিসেবে নামা রাফায়েল লিয়াও। লিয়াওর গোলের পরই ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজে। ৬-১ গোলের বিশাল জয় দিয়ে কোয়াটার্রফাইনালে পৌঁছে যায় পতুর্গাল।
শেষ আটে পতুর্গালের প্রতিপক্ষ মরক্কো। শেষ ষোলোর ম্যাচে পেনাল্টিতে ৩-০ গোলে স্পেনকে হারিয়ে কোয়াটার্র ফাইনালে উঠে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে মরক্কো।
For add
For add
For add
For add
for Add